মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ৪ রবিউস সানি , ১৪৪৬ | ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন
সোমবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৮:১৪ অপরাহ্ন Zoom In Zoom Out

ইআরএফের সঙ্গে বাজেট আলোচনা

বেসরকারী খাতে করদাতা খুঁজতে বদ্ধপরিকর এনবিআর

img

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বেসরকারিভাবে করদাতা খুঁজে বের করার উদ্যোগ টিআরপি প্রকল্প সফল করতে বদ্ধপরিকর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যদিও প্রকল্পটির নিয়োগ পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। তবে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে প্রকল্পটি সফল করার ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। 
সোমবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাপক হারে করজাল বাড়াতে হলে প্রত্যক্ষ কর বা ব্যক্তি আয়ের করের জায়গাটি বাড়াতে হবে। এর জন্য টিআরপি প্রোগ্রাম সফল করতেই হবে। 
সারাদেশে করযোগ্য আয় ও কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) আছে এমন করদাতা খুঁজে বের করতে চায় এনবিআর। এজন্য আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতকারী (টিআরপি) নিয়োগের উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি। ইতোমধ্যে টিআরপি বিধিমালাও জারি করা হয়েছে। তবে বিধিমালাকে ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে তা বাতিলে আন্দোলন করে আসছেন আয়কর আইনজীবীরা। 
আইনজীবীদের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ ট্যাক্স লয়েয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ঢাকা ট্যাকসেস বার অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এর বিরুদ্ধে রিট পিটিশন দায়ের করে। গত ১৫ জানুয়ারি রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে টিআরপি নিয়োগ পরীক্ষা কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন এবং বিষয়টি নিয়ে কারণ দর্শাতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুলও জারি করেন উচ্চ আদালত। 
তবে আইনি বাধা কাটিয়ে উঠে প্রকল্পটি সফল করতে পারবেন দাবি করে আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, একটা বাধা এসেছে, কোর্টে কেস চলছে। আমরা এটাকে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসব। কোর্ট কেন এটার বিপক্ষে যাবেন বা রায় দেবেন, সেটার পক্ষে কোনো যুক্তি নেই। এটা কোনো ওভারল্যাপিংও নয়, খারাপ কিছু নয়। কাউকে আহত করার বা কারও আয় নষ্ট করে দেওয়ারও কোনো দুরভিসন্ধিও নেই। 
প্রকল্পের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যায় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আয়কর আইনজীবিরা কী করেন? একজন ব্যক্তি যখন মনে করেন কর দেওয়া প্রয়োজন, তখন তিনি আয়কর আইনজীবির কাছে যান। আইনজীবিরা কারও কাছে যান না, নতুন করদাতা খুঁজে বের করেন না। টিআরপি প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা নতুন করদাতা খুঁজে বের করব। নতুন করদাতা যখন নিয়ে আসব, তাঁরা যখন নিয়মিত কর দেওয়াতে অভ্যস্থ হবেন, তখন তাঁরা টিআরপি ছেড়ে রিটার্ন দাখিলের জন্য আয়কর আইনজীবিদের কাছেই যাবেন। আইনজীবিদের ব্যবসাও বাড়বে। 
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা টিআরপি প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি করের আওতা বাড়ানোর জন্য। প্রচুর মানুষ বলেন, গ্রামে-গঞ্জের অনেক মানুষের এখন রিটার্ন দেওয়ার সক্ষমতা আছে। গ্রামে গিয়ে ইনকাম ট্যাক্সের অফিস করেন। আধুনিক যুগে গ্রামে গিয়ে ইনকাম ট্যাক্স অফিস করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এ জন্যই আমরা টিআরপি প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি। সেটা আমরা যেকোনোভাবেই সফল করতে চাই। আমাদের হাতে অন্য কোনো পথ নেই দ্রুত করের আওতা বৃদ্ধির। 
আলোচনায় কর কাঠামোর সংস্থারের ওপর জোর দিয়ে বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য ৩৫টি প্রস্তাব দেয় ইআরএফ। সংগঠনটির সদস্য দৌলত আকতার মালা প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। এসময় ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। 
বাজেটে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্রশ্রেণির ওপর করের বোঝা কমাতে বাড়তি দেওয়া কর এমএফএসের মাধ্যমে ফেরতের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করে ইআরএফ। আর যাদের করযোগ্য আয় নেই, তাদের ব্যাংক সুদের ওপর কর্তিত টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়। 
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, শিক্ষা ও চিকিৎসা উপকরণে করহার ৫ শতাংশে সীমিত রাখার পক্ষে ইআরএফ। এ ছাড়াও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিকাশে পৃথক রাজস্ব নীতি প্রণয়ন এবং এর জন্য বন্ড সুবিধা সহজীকরণ, বেসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডকে করমুক্ত রাখা, ব্যক্তি করদাতাদের সর্ব্বোচ্চ করহার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ করা, ভ্যাটের হার স্থায়ীভাবে ৭ শতাংশ করা ও মিডিয়ার কর হার কমিয়ে আনার সুপারিশ করে ইআরএফ।

Facebook Comment

Your Comment

আরো খবর